সৎসঙ্গ
সৎসঙ্গ মানে সৎ , ন্যায়বান , সুবিবেচক মানুষের সঙ্গ। যে সঙ্গ বা সান্নিধ্য থেকে সুপরামর্শ , সদুপদেশ এবং কল্যাণধর্মিতার পরিচয় লাভ করা যায় তাকে সৎসঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। কিন্তু মানুষ সেরা হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বিভিন্ন লােকের সান্নিধ্য ও সহযােগিতায় মানুষের জীবনের বিকাশ ঘটে। এসব মানুষের মধ্যে যারা উপকারী ও কল্যাণকামী তাদের সঙ্গই সৎসঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। অন্যের সাহায্য - সহযােগিতা গ্রহণ করে মানবজীবনের কর্মপ্রবাহ অগ্রসর হয় সামনের দিকে। বাইরে থেকে সহায়তা এসে সে প্রবাহকে পুষ্ট করে এবং তাকে গন্তব্যে পৌঁছতে সহায়তা দেয়। এই সহায়ক মনােভাব সম্পন্ন ব্যক্তির সান্নিধ্যই সৎসঙ্গ। যেসব বন্ধু সৎ পরামর্শ দিয়ে , উদার সহযােগিতা দানের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে। দেয় তাদের সাহচর্যই সৎসঙ্গ। কল্যাণকামী বন্ধুরা বা সঙ্গীরা সাহায্য করে জীবনকে গড়ে তােলার জন্যে। সৎসঙ্গীরা জীবনকে অর্থবহ এবং সুন্দর করে তােলে , তাই সৎসঙ্গ চিরদিন মানুষের কাম্য। মহানবি হযরত মুহম্মদ (Phalanges Phalanges স) বলেছেন , “ সৎসঙ্গের তুলনা আতর বিক্রেতার তুল্য। সে তােমাকে দিক বা না দিক , তুমি তার সুগন্ধি পাবেই। ”
জীবনে কোনাে সঙ্গী না থাকলে অসহায় অবস্থার সৃষ্টি হয়। বুদ্ধি , পরামর্শ ও সহায়তার মাধ্যমে বন্ধুর সমস্যা দূর করে যথার্থ সৎসঙ্গীর পরিচয় দেয় মানুষ। তাই সৎসঙ্গীর প্রয়ােজনীয়তা মানবজীবনকে তাৎপর্যমণ্ডিত করে তােলে। যেখানে নিজের বুদ্ধি কুলিয়ে উঠতে পারে না , সেখানে সৎসঙ্গীর পরামর্শ অনেক সময় সাফল্য এনে দিতে পারে। কিন্তু সঙ্গী যদি অসৎ হয় তবে ফল হতে পারে তার বিপরীত। মানুষের জীবন অন্যের ওপর নির্ভরশীল বলে সঙ্গী ছাড়া চলেও না। অনেকেই বন্ধুর ছদ্মবেশ ধারণ করে সর্বনাশ করার জন্যে এগিয়ে আসে। সৎসঙ্গে স্বর্গবাস , অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ’–এই সুপ্রাচীন প্রবাদ থেকে মানবজীবনে সৎসঙ্গের প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তাই সৎসঙ্গ লাভের জন্যে বন্ধু নির্বাচনের প্রশ্নটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সৎসঙ্গের কল্যাণে সামাজিক পরিবেশ সুন্দর হয়। মানুষ সেখানে সুখের সন্ধান পায়। জীবনের গঠনে , জীবনের বিকাশে এবং জীবনযাপনে সৎসঙ্গের উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক।